রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হৈমন্তী গল্পের নায়ক অপু তার বিয়ের আসরে কনের হাত ধরে মনে মনে বলেছিলো, ‘আমি পাইলাম, আমি ইহাকে পাইলাম।’
আমাদের এ গল্পের সাথে অপু-হৈমন্তীর গল্পের কোনো মিল নেই তবে যুক্তরাজ্যের এলিজাবেথ কের এবং সাইমন ও ব্রায়েনের এ গল্প পড়ার পর আপনার মনে হতেই পারে, ‘হ্যা তারাও অবশেষে তাদেরকে পাইলো।’
গত বছরের জুনে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো কের(৩১) ও ব্রায়েনের(৩৬)। কিন্তু চলমান এই ভয়াল মহামারীতে বদলে যায় সব। দুজনেই কোভিড আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে।
তবে হাসপাতালে দিন দিন অবস্থা খারাপ হতে থাকায় দুজনকেই আইসিউতে স্থানান্তর করা হয়। এই পরিস্থিতিতে কের চিকিৎসকদের জানায় তাদের বিয়ের কথা।
তাই কের ও ব্রায়েনের অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার আগেই গত ১২ ই জানুয়ারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিয়ের আয়োজন করেন। নিকটাত্মীয়দের নিয়ে এই বিয়েতে রাখা হয় কেক ও ফটোগ্রাফির ব্যবস্থাও।
তবে বিয়ের পর অনেকটা আকস্মিকভাবেই ধীরে ধীরে সেরে উঠতে থাকেন তারা৷ যদিও এখনো অক্সিজেন নিতে হচ্ছে তাদের।
বিয়ের পর এক রাত ভেন্টিলেশনে রাখা হয় ও ব্রায়েনকে। এরপর দুজনের দেখা হয় কোভিড ইউনিটে।
স্বামীর হাতে হাত রেখে কের বললেন,’ আমাদের প্রথম চুম্বনের জন্য বেশ কটা দিন অপেক্ষা করতে হলো।’
বিয়ের বিষয়ে কের জানায়, প্রতিটি নিঃশ্বাসের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ আপনার পছন্দের মানুষ। যদি তখন তার বিয়ের ব্যবস্থা করা না হতো তাহলে হয়তো আজ গল্পটা ভিন্নও হতে পারতো। ‘
কারণ চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছিলো, ‘তার বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা খুব কম।’
হাসপাতালের নার্স হ্যানা ক্যানন এই নব দম্পতির সুন্দর মুহূর্তগুলোর স্বাক্ষী ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘সবার মিলিত উদ্যোগেই আমরা এই বিয়ের আয়োজন করতে পেরেছি। হয়তো তাদের পরিকল্পিত বিয়ের মত আয়োজন করতে পারিনি তবে অবশ্যই এই বিয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ‘
রয়টার্স.কম থেকে কের ও সাইমন ও ব্রায়েনের গল্পটি অনুবাদ করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া