MCJ NEWS

এখনও জ্ঞান ফেরেনি, লাগবে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা

শাহিন ইয়াসার:

পরিবারের ছোট সন্তানগুলো বরাবরই মা-বাবার অনেক আদরের হয়। হাসি-খুশি আর প্রাণোচ্ছল স্বভাবে পরিবারের সবাইকে মাতিয়ে রাখে তারা। কিন্তু সেই হাসিখুশি থাকা আদরের সন্তানটি যখন দিনের পর দিন হাসপাতালের বিছানায় পড়ে থাকে তখন পরিবারের মধ্যে শুরু হয় হাহাকার।

তেমনই এক পরিবারের আদরের ছোট সন্তান ইরফান। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করা ইরফানের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলায়। ইরফান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

গত নভেম্বর মাসের ৯ তারিখ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঢাকাগামী এক বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন ইরফান। আর এই দুর্ঘটনা তার হাসিখুশি জীবনকে ঠেলে দেয় অন্ধকারে। প্রায় চার মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ইরফানের শারীরিক অবস্থার এখনও কোনো উন্নতি নেই। স্বাভাবিক কোনো জ্ঞান নেই তার। ইরফানের এই অবস্থায় মানসিক ও আর্থিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে তার পরিবার।

ইরফানের বর্তমান অবস্থা ও অন্যান্য বিষয়ে জানতে তার বড় ভাই আমান উল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এমসিজে নিউজকে জানান, প্রথমে আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। অজ্ঞাত এক ব্যক্তির কাছ থেকে ফোন আসলে আমার চাচাতো ভাই আমাদেরকে ইরফানের অ্যাকসিডেন্টের কথা জানান। ইরফান আমাদের পরিবারের সবার ছোট। এই কথা শোনার পর আমাদের কারও অবস্থাই ঠিক ছিল না। আম্মু তখন বার বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন!

প্রাথমিক অবস্থায় রাস্তায় থাকা লোকজন ইরফানকে কুমিল্লা মেডিকেলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেল থেকে ওকে ঢাকা স্থানান্তর করা হয়। ঢাকায় প্রথমে যাত্রাবাড়ি (মাতুয়াইল) এসএমসি হাসপাতালে আইসিইউতে ছিল। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় ঢাকার ইবনে সিনায়। এরপর থেকে এখানেই চলছে চিকিৎসা।

ইরফানের অ্যাকসিডেন্ট হয় ৯ নভেম্বর। এ পর্যন্ত বড় কোন সাহায্য পাইনি। ওর সহপাঠী, ছোট ও বড় ভাইয়েরা নানা ভাবে সাহায্য করেছে। এখনও চেষ্টা করছে করার। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিংবা ইরফানের বিভাগ থেকে তেমন আশানুরূপ কোনো সাহায্য পাইনি আমরা।

চিকিৎসা খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে তার ভাই জানান, ইরফানের আইসিইউ বিল ২৭ লক্ষ ও মেডিসিন বিল প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা এখনও অপরিশোধিত। তাছাড়া আমাদের পরিবারের খরচ তো আছেই তার কোনো হিসাব নেই। ধার-দেনা করেই চলতে হচ্ছে এখন।

তিনি আরও বলেন, সুস্থ হতে কতদিন লাগবে এটা বলা মুশকিল। ইরফানের এখনও জ্ঞান ফেরেনি। ডাক্তার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার কথা বলছে। দৈনিক প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হচ্ছে। আমাদের পরিবারের বর্তমান অবস্থাও তেমন ভালো না। সবার সাহায্য সহযোগিতা পেলে আমাদের জন্য চিকিৎসা চালিয়ে যেতে সুবিধা হবে।

/আসিফ

শেয়ার করুন -