‘অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে গেলে অন্তত বসার জায়গাটুকু পাওয়া যায়। কিন্তু এখানে দাঁড়াতেও জায়গা পাচ্ছি না, বৃষ্টির মধ্যে ভিজে অপেক্ষা করছি। তবুও আশা রাখি, সন্তানের জন্য এই কষ্ট সফল হোক।’ এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা এক পরীক্ষার্থীর মা শামীমা ইয়াসমিন। তার সন্তান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ কেন্দ্রে।
১৯ এপ্রিল (শনিবার) কুবির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ‘সি’ ও ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন কুবি ক্যাম্পাস ছাড়াও কুমিল্লা শহরের ৩০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়া অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে ছিল না পর্যাপ্ত সহযোগিতা ব্যবস্থা, যা অভিভাবকদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অভিভাবকরা জানান, কুবি ক্যাম্পাসে পরীক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সংগঠনের সহযোগিতা ছিল বুথ, তথ্য সহায়তা ও বসার ব্যবস্থা। কিন্তু শহরের অন্যান্য কেন্দ্রে এসবের কিছুই ছিল না। ফলে বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে অনেককেই দাঁড়িয়ে কিংবা ভিজে সন্তানের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ কেন্দ্রে আসা এক অভিভাবক বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে এসেছি পরীক্ষা দিতে। রাস্তার পাশে বসে ছিলাম। বৃষ্টি শুরু হলে একটি দোকানে ঢুকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু দোকানি আমাদের বের করে দিয়ে সাঁটল বন্ধ করে দিলেন। এত কষ্ট করে এত দূর আসি, অন্তত একটু বসার জায়গা যদি পেতাম! সন্তান একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে এই আশাতেই সব কষ্ট সয়ে নিই।’
অভিভাবকদের মতে, শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় বিভিন্ন সংগঠনের উপস্থিতি থাকলেও অভিভাবকদের জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তারা সন্তানের মাথায় ছাতা ধরে বৃষ্টিতে ভিজেছেন, রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থেকেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তারা মনে করেন, ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র নির্ধারণের সময় অভিভাবকদের কথাও বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল। শুধু পরীক্ষার্থী নয়, একজন শিক্ষার্থীর স্বপ্নের পেছনে তার পরিবারও সমানভাবে লড়াই করে যাচ্ছে।
এমনই এক অভিভাবক আসমত আরা বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে এসেছি পরীক্ষা দিতে। বৃষ্টির কারণে ভিজে গিয়েছি। সন্তানের জন্য এই কষ্ট করতেই হয়। তবুও চাই, এই কষ্টটা যেন সার্থক হয়, সন্তান যেন কোথাও টিকে যায়।’
/পলি , আবু সাঈদ