
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের পাশে প্রায় ২০টি গাছ উপড়ে ফেলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে হলের স্টাফরা গাছ সরানোর কাজ শুরু করেন। তাদের দাবি, হল প্রশাসনের নির্দেশেই এ কাজ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, একদল শিক্ষার্থী গাছ অপসারণের বিরোধিতা করছে, অন্যদিকে কিছু শিক্ষার্থী ব্যাডমিন্টন কোর্ট সম্প্রসারণের লক্ষ্যে গাছ উপড়ে ফেলার সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিচ্ছে। তবে গাছ উপড়ে ফেলার পক্ষে কেউই সরাসরি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি। সমর্থনকারীরা মনে করছেন, গাছ সরানোর ফলে হলের সামনে একটি খোলা জায়গা তৈরি হয়েছে এবং স্থানটি আরও আকর্ষণীয় মনে হবে।
গাছ উপড়ে ফেলার বিরোধিতা করে ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সিমান্ত মিয়া বলেন, “গাছগুলো হলে ওঠার সময় থেকে দেখে আসছি। চার বছর ধরে এগুলোর বড় হয়ে ওঠা দেখেছি, যদিও আরও আগেই লাগানো হয়েছিল। হলের সামনের এই গাছগুলো পরিবেশকে সুন্দর করত। খেলার মাঠের জন্য গাছগুলো যেভাবে কাটা হলো তা মেনে নেওয়া কঠিন। প্রোভোস্ট স্যার বলেছিলেন গাছগুলো মাটি সহকারে তুলে স্থানান্তর করা হবে, কিন্তু আজ হঠাৎ করেই সেগুলো কেটে ফেলা হলো। কিছু গাছ এমনভাবে কাটা হয়েছে যেন আগে থেকেই মৃত ছিল। চা, বেলি সহ আরও বেশ কিছু গাছ ছিল এখানে। এমন আচরণ প্রকৃতির প্রতি অবহেলারই পরিচয়।”
এ বিষয়ে কুবি’র পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন অভয়ারণ্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আদনান আলম জানান, “এ ধরনের ঘটনা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নয়, বহু সময় দেখা যায় প্রশাসন নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাছ কাটার উদ্যোগ নেয়। আরও বিস্ময়ের বিষয়, কিছু শিক্ষার্থীই আবার এ ধরনের উদ্যোগকে সমর্থন দেয় এবং পরিবেশকর্মী ও সংবাদকর্মীদের প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করে। চার বছরেরও বেশি সময় ধরে গাছগুলো এখানে টিকে ছিল, শিক্ষার্থীরা পাশেই ব্যাডমিন্টন কোর্টে খেলত। এতদিন পর হঠাৎ করেই গাছগুলো উপড়ে ফেলা এটা স্বাভাবিক প্রশ্ন তোলে।”
তিনি আরও বলেন, “খেলার মাঠ বা সৌন্দর্য বৃদ্ধি উদ্যোগের নামে যেন আর কোনো গাছ নষ্ট না হয়। মাননীয় উপাচার্য স্যারের প্রতি অনুরোধ, গাছ কাটার বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হোক।”
এ বিষয়ে জানতে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট মোহাম্মদ হারুন এর কাছে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করে কেটে দেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বচ্ছ ব্যাখ্যা এবং ভবিষ্যতে গাছ রক্ষায় কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের দাবি এখন শিক্ষার্থী ও পরিবেশসচেতনদের মুখে মুখে।
এফকে/ফরহাদ